একজন মানুষকে তার জীবনপথে চলতে গেলে বিভিন্ন সমস্যা, বিভিন্ন রোগের মুখে পড়তে হয়। আর আমরা কোনো কিছু চিন্তাভাবনা না করেই রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এ্যান্টিবায়োটিক সেবন করে থাকি৷ যা অনেক ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্ত। এমন অনেক রোগ আছে যা কয়েক সপ্তাহেই ঠিক হয়ে যায়। আর তাছাড়া অনেক প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি ভেষজ উদ্ভিদ আছে। যা দিয়ে ঘরোয়া ঔষধ তৈরি করা যেতে পারে। কিন্তু আমরা তা না করেই ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনে খাই। আর এর অনেক প্বার্শ প্রতিক্রিয়া আছে। যা বয়সের একটা পর্যায়ে ধরা পড়ে। তাই যতটা সম্ভব এন্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন । আর জেনে নিন, বিভিন্ন রোগের ঘরোয়া ঔষধ তৈরিতে যেসব ভেষজ উদ্ভিদ লাগে।
কফের সমস্যা সমাধানে
সর্দি, কাশি হলেই এখন আর জোড়তোড় করে অ্যান্টোবায়োটিক খাওয়ার দরকার নেই৷ এখন কাশি সমস্যার সবচেয়ে বড় সমাধান হতে পারে মধু । যা একটি গবেষণায় উঠে এসেছে। যেখানে অ্যান্টিবায়োটিকও এতো ভালো কাজ করতে পারে না । কিন্তু মধু এর চেয়েও অনেক ভালো কাজ করে।
এছাড়া, দুই তিন সপ্তাতেই আপনা আপনিই কাশি ঠিক হয়ে যায়।সেখানে এন্টিবায়োটিক খাওয়াটা নিতান্তই ভুল সিদ্ধান্ত । তাই কাশি সমস্যা সমাধানে মধু খাওয়াই উত্তম।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্স (এনআইসিই) এবং পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড সম্প্রতি একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করে । যেখানে বলা হয়েছে । গরম পানিতে সামান্য মধু, লেবুর রস ও আদার রস মিশ্রিত পানীয় খেলে কফ ও গলা ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে।
কিভাবে চুল পড়া সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারি?দুইটি ধাপে এর সমাধান দেখবো
চুল মানুষের সৌন্দর্যের অন্যতম আকর্ষন। চুল পড়া সমস্যা যেকোনো বয়সের মানুষের কাছেই অস্বস্তির বিষয়। বিশেষ তরুনদের কাছে এই সমস্যাটি সবচেয়ে দুশ্চিন্তার। কারন, চুল একজন মানুষের সৌন্দর্যের প্রতীক বা বয়স মাপার প্রতীকও বলা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, দিনে ১০০ টি চুল হারানো স্বাভাবিক। কিন্তু এর বেশি চুল পড়া একটি সমস্যা।
কারো পুষ্টির অভাবে আবার কারো ডায়েট কন্ট্রোলের অভাবে চুল পড়ে থাকে। ফাস্ট ফুড, সফট ড্রিংকস চুল পড়ার কারন। চুল ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ও পানি দিয়ে গঠিত। প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুল পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কারন, শ্যাম্পু হলো অ্যালকালিক বা ক্ষার। আর এই ক্ষার, প্রোটিনের সাথে মিশে, প্রোটিনকে ভেঙ্গে ফেলে।
তাই এখন আমরা আলোচনা করবো, কিভাবে চুল পড়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
চুল পড়ার কারন হলো ভিটামিন সি। আর এই আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আমলকী,চুল পড়া বন্ধ, চুলের গোড়া শক্ত ও চুলের খুশকি দূর করে। হারবাল তেলের সাথে এই আমলকীর রস মিশিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া, ব্রাক্ষী, আমলকী ও তিলের তেলের মিশ্রন মিশিয়ে বানানো তেল। এ তেল দিনে তিন বার ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হয়।
আমলকীর রস, ডিমের সাদা অংশ, হারবাল তেল ও লেবুর রসের মিশ্রন চুল পড়া বন্ধ করে। চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে । এছাড়া, চুল পড়া রোধ করে চুলের বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা রাখে পেঁয়াজের রস । যা চুলের জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়া, প্রথমে সমপরিমাণ আমলা জুস ও লেমন জুস একটি পাত্রে ঢালুন ৷ এরপর উপকরণ দুইটিকে ভালো মতো মিক্স করুন। ফলে এক ধরনের রস পাওয়া যাবে । প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু ব্যবহারের পর এই রসটি চুলে মাখুন এবং কিছুক্ষন পরে ধুয়ে ফেলুন।
চুলে খুশকি থাকলে
পানির মধ্যে ভেষজ উদ্ভিদ জাতীয় বীট পালং এর সারাংশ ও শিকড় অনেকক্ষন ফুটাতে হবে। এরপর প্রতিদিন রাতে মাথার চুলে এই ভেষজ মিশ্রিত জল ম্যাসেজ করতে হবে ।
গলায় কালশীটে হওয়া
প্রথমে যা যা নিতে হবে৷ এক চা চামচ মরিচের গুড়া, এক চা চামচ আদার গুড়া এবং এক চা চামচ মধু । এরপর এগুলো মিক্স করতে হবে এবং দিনে দুইবার এটি ব্যবহার করতে হবে।
ঘামের জন্য
দুই চা চামচ মধু এবং সাথে দুই চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার নিয়ে মেশাতে হবে । প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এই মিশ্রিত উপকরণ খেতে হবে ।
ম্যালেরিয়ার লক্ষন কি?
কেউ ম্যালেরিয়ায় ভুললে প্রথম দিকে বোঝা খুব কঠিন। আগে এই ম্যালেরিয়ার কারনে অনেক মৃত্যু হতো। এটি স্বাভাবিক জ্বরের মতোই বেশি তাপমাত্রায় আসতে পারে। সাধারণ জ্বরের মতোই ম্যালেরিয়া রোগেও সর্দি-কাশি আসতে পারে।
কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসাকে অনেকে ম্যালেরিয়া ভাবেন। আসলে এটি কি ম্যালেরিয়া?
যেকোনো উচ্চ তাপমাত্রার জ্বরেই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে। সাধারণত, শরীরে কোনো জায়গায় পুঁজ জমা হয়ে থাকলে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে। নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রেও এরকম হতে পারে।
এর মানে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা মানেই ম্যালেরিয়া হয়েছে বলা যাবে না।
এর সমাধানের জন্য
একটি পাত্রে এক গ্লাস দুধ নিতে হবে। সাথে এক চা চামচ দারুচিনি পাউডার । এরপর এগুলো ফুটাতে হবে । ফুটানো শেষে কিছুক্ষনের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় আসলে পান করার যোগ্য হবে । তবে মরিচের গুঁড়া ও মধু এক ড্যাশ করার পর এটি পান করতে হবে ।
মানসিক সমস্যা নিরাময়ে
মানসিক চাপ আসে মস্তিষ্ক নির্দেশে । সেই মস্তিষ্কের নির্দেশকে যদি, আমরা কিছুটা পরিবর্তন করতে পারি । তাহলেই একমাত্র সম্ভব । কিন্তু কিভাবে? এ জন্য আমরা ভেষজ উদ্ভিদকে কাজে লাগাতে পারি । এজন্য প্রথমে এলাচের বীজকে পানিতে ফুটাতে হবে । এতে চা পাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে হবে । এতে থাকবে কিছুটা সুভাষ৷ তাহলে আপনার মস্তিষ্ক কিছুটা হলেও স্তির থাকবে ।
মাথা ঝিমঝিম সমস্যা সমাধানে
প্রথমে ধনে বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সাথে আমলার পাউডার । সারারাত এটি রেখে দিতে হবে৷ তারপর এর সাথে চিনি মিশিয়ে সকালে পান করতে হবে।
চোখে চুলকানির সমস্যায়
একটি কাপে ডিস্ট্রিল্ড ওয়াটার নিতে হবে । এর পর ঐ কাপে দুইটি গ্রিন টি ব্যাগ নিয়ে, ঐ পানিতে ফুটাতে হবে ।
তারপর এই পানিতে, চোখে আলতোভাবে ওয়াশ করতে হবে ।
মুখে আলসার হলে যা করবেন
বেকিং সোডা কয়েক ফোঁটা পানির সাথে মেশাতে হবে । তারপর এই মিক্সার পানি ব্যবহার করতে হবে । কিভাবে এবং কোথায়? ক্ষতস্থানে এই পানি ১৫ মিনিট ধরে ব্যবহার করতে হবে ।
আপনার কি ডাইরিয়ার সমস্যা আছে? তাহলে জেনে নিন, ডাইরিয়ার নিরাময়ের সমাধান
ডাইরিয়া সমস্যায় উপকরন হিসেবে লাগবে, একটি চা চামচ । এছাড়া, পুদিনা ও লেবু । এক চা চামচ পুদিনার রস নিতে হবে। সাথে এক চা চামচ লেবুর শরবর । এরপর সবগুলো উপাদান মিশাতে হবে৷ যা ডাইরিয়া চিকিৎসায় দিনে তিনবার খেতে হবে।
নিন্ম রক্তচাপের সমস্যায়
৭ টি কাজুবাদাম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর এর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। যাকে গুঁড়া গুঁড়া করে পেস্ট বানাতে হবে৷ তারপর গরম দুধের মধ্যে এটি নিশিয়ে খেতে হবে৷
পাকস্থলিতে এসিডিটি সমাধানে
আগে জানবো যে কারনে এসিডিটি হয়ে থাকে – মূলত, এসিডিটি হয়ে থাকে পাকস্থলিতে অম্লীয়ের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্য। কারন, আমাদের পাকস্থলি এমনিতেই HCl নির্গত করে । এছাড়া,অতিরিক্ত কোমল পানীয় পান করলে। তেলযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে এসিডিটি হয় । অতিরিক্ত চা, কফি জাতীয় আইটেম এবং চকলেট খেলেও এই সমস্যা হয়।
যে খাবার খেলে এসিডিটি থেকে রেহাই পেতে পারেন- সাধারণত বড় ধরনের ভোজ করার পর। কোমল পানীয় সীমিত মাত্রায় খাওয়া উচিত। এছাড়া,বোরহানি ও দই খেলেও সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কারন, এতে থাকে ল্যাকটিক এসিড থাকে৷ যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। ক্ষার জাতীয় খাবার এসিডিটির সমাধান হতে পারে । তাহলে এখন প্রশ্ন কোন কোন খাবারে ক্ষার থাকে? শাকসবজি, পুঁইশাক, পালংশাক, বীট,ফুলকপি,বাঁধাকপি ইত্যাদি খাবারে ক্ষার বিদ্যমান।