একটা প্রবাদ দিয়ে শুরু করা যাক,”চকচক করলেই সোনা হয় না” আসলে এখানে সোনার যে উপাদান কিংবা বৈশিষ্ট্য চাকচিক্যের মাধ্যমে প্রকাশ পায় না, যেটা তার উপাদান মাধ্যমে বোঝা যায় সেটা উপলব্ধি করানো জন্য বলা হয়েছে।বাহ্যিক সৌন্দর্য আসল নাকি অন্তরের সৌন্দর্য!
মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে আশরাফুল মাকলুকাত হিসেবে প্রেরণ করেছেন পৃথিবীতে। আল্লাহ তায়ালা, মানুষ বানিয়েছেন বিভিন্ন অববায়বে কেউ কালো, কেউ শ্যামলা, কেউ ফর্সা, এটা আল্লাহ তায়ালা একান্ত মেহেরবান। তবে কি আমরা বলতে পারি যে, এই সুন্দর আর কম সুন্দর দিয়ে মানুষের সব বিষয়গুলো বিবেচনা করা যায়? আমরা কি তাহলে ধরে নিতে পারি যে বাহ্যিক সৌন্দর্য ই মানুষের আসল সৌন্দর্য?বাহ্যিক সৌন্দর্য আসল নাকি অন্তরের সৌন্দর্য!
আসুন তাহলে এখন একটু কুরআন থেকে দেখি আল্লাহ তায়ালা কি বলেছেন, চেহারা আল্লাহ তাআলার নেয়ামত, তাঁর বিশেষ দান। আল্লাহ সবচেয়ে সুন্দর চেহারা দিয়েছেন মানুষকে। মানুষের মাঝে সবচেয়ে সুন্দর চেহারা দিয়েছেন নারীকে। সাদা-কালো, ধূসর, বাদামী কত রঙের, কত বর্ণের মানুষ। কত মানুষের কত রূপ। কোটি কোটি মানুষের মাঝে একজনের চেহারা আরেকজনের সাথে মেলে না। এটা আল্লাহর কুদরত, তাঁর কুদরতের নিদর্শন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। (রূম ৩০ : ২২)বাহ্যিক সৌন্দর্য আসল নাকি অন্তরের সৌন্দর্য!
আসুন এখন একটা গল্প শেয়ার করি, গল্পটার নাম,” মানুষ নামের এই যন্ত্র চেনা বড় কঠিন”
পৃথিবীতে আমার কাছে এ পর্যন্ত মনে হয়েছে যে, মানুষকে চেনা কিংবা বোঝা পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন এবং দুঃসাধ্য কাজ। এখন আপনাদের প্রশ্ন থাকতে পারে কেন আপনি এই কথা বললেন, তাহলে চিন্তার দোয়ার টা একটু খুলে দিয়ে দেখেন,পৃথিবীতে কত আত্নহত্যা হচ্ছে, কত খুন হচ্ছে, কত ডিভোর্স হচ্ছে, কত মানুষের আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। এখন ভাবুন এগুলো কেন হচ্ছে? এগুলো যাদের সাথে হয় তারা কি একদিনের পরিচয়ের মানুষ? না কখন ও না।তাদের সাথে তো অনেক দিনের সম্পর্ক থাকে। তাহলে এখন চিন্তা করুন যদি তাদের কে সঠিক ভাবে বোঝা যেত তাহলে কি আর এগুলো ঘটনা হওয়ার সম্ভবনা থাকতো।আমার মনে হয় থাকতো না। মানুষের অন্তরের খবর শুধুমাত্র আল্লাহ পাক আর সেই ব্যাক্তি ছাড়া আর কারও সম্ভব না। এটাই বাস্তবতা, এটাই দুনিয়ায় জীবন এ মানুষের সত্য অবলোকন। এজন্য গল্প টা বলা মানুষ চিনা বড় কঠিন কাজ।বাহ্যিক সৌন্দর্য আসল নাকি অন্তরের সৌন্দর্য!
এবার চলুন মুল বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করা যাক, “বাহ্যিক সুন্দর কে সুন্দর বলে না, অন্তরের সৌন্দর্য ই আসল সৌন্দর্য” এতো সময় আলোচনা থেকে তাহলে বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই আসল সুন্দর হচ্ছে অন্তত। যার অন্তত টা সাদা সেই প্রকৃত সাদা মানুষ।বাহ্যিক সৌন্দর্য আসল নাকি অন্তরের সৌন্দর্য!
আরেকটা গল্প না বললেই নয়, গল্পটির নাম:
“মানুষকে বিশ্বাস করা বড় দায়”এটা বর্তমান পৃথিবীতে একটা বড় চ্যালেজ্ঞ মানুষকে বিশ্বাস করা।আপনি কাকে বিশ্বাস করবেন? আর কাকে অবিশ্বাস করবেন এই দুইটার মধ্যে পার্থক্য করায় একটা বড় হুমকি এখন।ধরুন,,, একটা ছেলে আর একটা মেয়ের ভালবাসার গল্প চিন্তা করুন,,,কবিতার সুরে,,,,,,,,,,,
দূরে গেলে তুমি,
হারিয়ে যাবাে আমি।
ভালােবাসি তােমায়,
বােঝনা কেন তুমি।
ছােট্ট এই জীবনে,
একটাই শুধু চাওয়া।
তােমাকে আপন করে,
আমার শুধু পাওয়া।বাহ্যিক সৌন্দর্য আসল নাকি অন্তরের সৌন্দর্য!
একজন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে সে যে তাকে প্রকৃত ভালোবাসে এটা বিশ্বাস করাতে গিয়ে কত কিছু করছে, কখন সুন্দর কবিতা লিখে কবি হচ্ছে, কখনও বা আবার হচ্ছে রমিও, আবার মাঝে মাঝে হচ্ছে সাজাহান,আবার কখনও হাত কেটে রক্ত দিচ্ছে, কখনও গিপ্ট দিয়ে খুশি করছে,কখনও কখনও জীবন দিয়ে বিশ্বাসের পরিসমাপ্তি ঘটাচ্ছে। এগুলো কয়েকটি উদাহরণ এরকম হাজারো গল্প আপনার সামনে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতোকিছু পরেও তাহলে বিশ্বাস যদি থাকে আমার প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে একজন কে ছেড়ে আর একজন কে কেন ভালো লাগছে? কেন সেই বিশ্বাস ভেঙে অবিশ্বাস এ পরিনত হচ্ছে?বাহ্যিক সৌন্দর্য আসল নাকি অন্তরের সৌন্দর্য!
উত্তরটা আমিই দেওয়ার চেষ্টা করি, কারনটা হলো অন্তরের কলুষতা থাকার কারন হচ্ছে এমনটা।মুখে যেমনটা প্রকাশ পাচ্ছে অন্তরে তার বিপরীত টা চিন্তা করছে। হয়তো সাময়িক আনন্দ উপভোগ করার জন্য হতে পারে সেটা।না হয়তো কোন তার নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে হতে পারে সেটা,নাহলে সাময়িক মোহের জন্য হতে পারে পারেন তাহলে অকল্যান করেন না”তাদের আমাদের জন্য রয়েছে কল্যান। আসলে বিশ্বাস ছাড়া দুনিয়ায় চলা কষ্টসাধ্য ব্যাপার,তাই এই বিশ্বাসের মর্যাদা আমাদের সকলেই থাকা দরকার। “অন্ততের কলুষিত অধ্যায়কে মুছে দিয়ে, নিজেকে করি সমৃদ্ধ এবং অন্যকে রাখি সুখে,
এটাই আসল সৌন্দর্য এটাই মুক্তির পাথেয়”প্রত্যকটা জীবন হয়ে উঠুক সুন্দর, মুছে যাক কালো মেঘ এটাই আগামী দিনের প্রত্যাশা।
লেখক: মোঃ হোসাইন আলী,সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।