28 C
Bangladesh
মঙ্গলবার, জুলাই ২৩, ২০২৪

ভালোবাসার আরেক নাম কাঠগোলাপ

মতামত ও ফিচারভালোবাসার আরেক নাম কাঠগোলাপ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রাণের উষ্ণতায় চিরযৌবন নিয়ে ফুটে উঠেছে কাঠগোলাপ। বৃষ্টিস্নাত পিচঢালা পথ। শিতল-মাতাল হাওয়া। সজীবতায় ছেয়ে আছে পুরো চবি ক্যাম্পাস। সেখানে আবার বাহারি ঢঙে ফুটে আছে কাঠগোলাপ। এই কাঠগোলাপের কথা মনে হলেই মনে পড়ে যায় কণ্ঠশিল্পী অর্ণবের গানের সেই চরণ ‘কাঠগোলাপের সাদার মায়া মিশিয়ে দিয়ে ভাবি’। আহ, গানটিতে যে কত মুগ্ধতা, তা যদি হয় এই মেঘলা দিনে কাঠগোলাপের বনে, তা হলে তো কথাই নেই।ভালোবাসার আরেক নাম কাঠগোলাপ

ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে মাথা উঁচিয়ে থাকা দূর্বাঘাসগুলো ধুয়েমুছে জ্বলজ্বল করছে। তার উপর কী সুন্দর করে যেন পড়ে ঘুমুচ্ছে কাঠগোলাপ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই গোলাপগুলো থেকে থেকে কুড়িয়ে নিচ্ছে কাঠগোলাপ প্রেমী কেউ, কেউ প্রিয় মানুষটির জন্য যত্ন করে রেখে দিচ্ছে। কেউ সৌন্দর্যে আত্মহারা, কেউ সুঘ্রাণে মাতোয়ারা। আর কেউ বা লিখছে কবিতার পর কবিতা। ভালোবাসার আরেক নাম যেন এই কাঠগোলাপ।ভালোবাসার আরেক নাম কাঠগোলাপ

আরো পড়ুন:  মাতৃকা

কাঠগোলাপ প্রেমী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফিয়া জাসারাত নোলক বলেন, “মেঘলা দিন। বাহিরে টুপটাপ বৃষ্টি হচ্ছে! হলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূর থেকে দেখা যায় ঐ ফুটে আছে কাঠগোলাপ। সাদার মাঝে হলুদ ছড়িয়ে যেন সকলকে নিজের রঙের মহিমায় বেঁধে রাখতে চায়। ছোট্ট একটা ফুল, কী মায়া, কী স্নিগ্ধতা! কাঠগোলাপের এই দৃষ্টিকাড়া সৌন্দর্য যেন পুরো ক্যাম্পাসকেই বিমোহিত করে রাখছে।”

তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাসে বিভিন্ন হলে ও নানা জায়গায় কাঠগোলাপের গাছ পাওয়া যায়। আবার কখনো কখনো বা শাড়ি পরে কানে একটি কাঠগোলাপ গুঁজে দিয়ে বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে কাঠগোলাপের সেই চিরচেনা সুবাসে হারিয়ে যেতে খুব ইচ্ছে করে। ক্যাম্পাসের এই বৃষ্টি ভেজা পথে কাঠগোলাপ হাতে বা কানে রেখে হাঁটার অনুভূতিটাই যেন ভিন্ন।”ভালোবাসার আরেক নাম কাঠগোলাপ

আরো পড়ুন:  তারুণ্যের ঈদ উদযাপন

এমনিতেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর চবি ক্যাম্পাস। তার উপর কাঠগোলাপেরা সেজে আছে অষ্টাদশীদের সাজে। সেই সাথে পাখিদের সুরের মূর্ছনায়এক প্রাকৃতিক কনসার্টে রূপান্তরিত হয়েছে এ ক্যাম্পাস। কবির কবিতা যেন। চোখ ফেরানোর যায় না। অপলক নেত্রে তাকিয়ে থাকার মতো। ছোট্ট একটা ফুল, কি সুন্দর তার ভাজ!

চবির সবচেয়ে প্রাচীন দু’টি হল এ এফ রহমান ও আলাওল হলের লাল ইটের সামনে নিজেদের মেলে ধরেছে এই কাঠগোলাপেরা। ওদিকে মেয়েদের হলেও শোভা পাচ্ছে এই ঘ্রাণ, এই যৌবন। বিলিয়ে দিচ্ছে কোমলতা, স্নিগ্ধতা। আর দু’হাতে বাড়িয়ে দিয়ে বাড়াচ্ছে ব্যাকুলতা।

এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী গিরেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, বন্ধ ক্যাম্পাসে প্রকৃতি’র অপরূপ সৌন্দর্য নানা বর্ণে-গন্ধে, ফুলে-ফলে চমৎকার রূপ ধারণ করেছে। গাছে যেমন আম, লিচু, কাঁঠাল পেকে আছে তেমনি প্রস্ফুটিত হয়ে আছে ফুলের রাজকুমারী কাঠগোলাপও। অপরুপ সৌন্দর্যের আঁধার পুরো চবি ক্যাম্পাসই যেন কাঠগোলাপে’র সুবাসে সুবাসিত হয়ে আছে।

আরো পড়ুন:  সবুজের মায়ায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

তিনি আরো বলেন, রুমের সামনেই কাঠগোলাপের গাছ। মাঝে মাঝে পড়তে বসলে জানালা দিয়ে কাঠগোলাপের সে কী ঘ্রাণ! বিমোহিত করে তুলে আমাকে। অপলক তাকিয়ে থাকতেই ইচ্ছে করে। মেঘলা আকাশে প্রস্ফুটিত কিংবা দূর্বাঘাসে বিছিয়ে পড়া কাঠগোলাপের দিকে কোন রসকষহীন ব্যাক্তিও যদি তাকায় তবে সেও যেন তার প্রেমে পড়ে যায়।ভালোবাসার আরেক নাম কাঠগোলাপ

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নং গেইট দিয়ে ঢুকতেই পথের দু’পাশে দেখ মেলে কড়ুই, মেহগনি, কাঠগাছের মতো নাম না জানা অসংখ্য সারি সারি বৃক্ষরাজি। সবুজ পাতা আর বৃষ্টির ফোঁটা যেন জড়িয়ে আছে আষ্টেপৃষ্টে। এছাড়াও পাহাড়ি ফুলে-ফলে ভরে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। কৃষ্ণচূড়া, সোনালুর সৌন্দর্যে বিমোহিত সবাই। কলা, লিচু, কাঁঠালে ভরপুর। সেই সাথে মাঝে মাঝে দেখা মিলছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীও। যেন এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।

লেখক: রেদ্ওয়ান আহমদ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles