বাংলাদেশে গবেষনা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে বিগত দুই বছর ধরে নানা আঙ্গিকে অবদান রেখে যাচ্ছে ‘গবেষক হতে চাই :: Be Researcher BD (BRBD)’ প্লাটফর্ম।
প্ল্যাটফর্মটির সূচনাকারী চুয়েটের সিএসই বিভাগের শিক্ষক মোঃ ছাবির হোসাইন। অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও টেকসই উন্নয়নসহ সকল বিষয়ের ওপর গবেষনাধর্মী কর্মসম্পাদনে সহায়তা করে থাকে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তারা দেশের উচ্চ-শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোতে গবেষনা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা, অভিজ্ঞ গবেষক তৈরী, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, উচ্চশিক্ষায় অনুপ্রেরনামূলক কন্টেন্ট তৈরী করছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘তরুণ গবেষকদের জন্য গবেষণায় প্রারম্ভিক ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ, চ্যালেঞ্জ এবং পরামর্শ’ শীর্ষক একটি আলোচনা অনুষ্ঠান বিআরবিডি পেজে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. প্রধান মাহবুব ইবনে সিরাজ, সহকারী অধ্যাপক, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন ড. সাইদুর রহমান, সানওয়ে ইউনিভার্সিটি, মালয়শিয়া; ড. আতিকুর রহমান আহাদ, ওসাকা ইউনিভার্সিটি, জাপান; ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), বাংলাদেশ ও ড. মুহাম্মদ মিলন হোসেন, কর্ণেল ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আর্মি মেডিক্যাল কলেজে, চট্টগ্রাম-এর লাইব্রেরিয়ান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক, মোঃ মনিরুল ইসলাম।
গত বছর একইভাবে বিআরবিডি-এর ১ম বর্ষ পূর্তিতে ‘বাংলাদেশের বর্তমান গবেষণা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায়’ – শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে।
এ বছর মূল প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয় ছিল, নবীন গবেষকদের জন্য নেটওয়ার্কিং এর প্রয়োজনীয়তা ও গবেষণায় ব্যবহৃত নানাবিধ টুলস যেমনঃ অর্কিড, রিসার্চগেট, পাব্লোনস, ওয়েব অফ সাইন্স, ইত্যাদির ব্যবহার। প্যানেল আলোচনায় ড. সাইদুর রহমান ভবিষ্যতে সেরা গবেষক হওয়ার পরিকল্পনা ও কর্ম সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তার দীর্ঘ ২৫ বছরের গবেষণার অভিজ্ঞতার আলোকে নবীনদের দিক-নির্দেশনা দেন। একজন পিএইচডি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একজন সুপারভাইসার যেসব বিষয় আশা করেন তা তুলে ধরেন ড. আতিকুর রহমান আহাদ। সফলভাবে পিএইচডি শেষ করার নানা কৌশল ও সুপারভাইজারের সাথে ভালো সম্পর্ক গঠনের দিকে তিনি জোর দেন।
এরপর ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী দেশে মাল্টিডিসিপ্লিনারি গবেষণার নানাদিক ও সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরেন। দেশের সমস্যা সমাধানে ল্যাব-ভিত্তিক গবেষণার বিষয়টিও তার আলোচনায় আসে।
সবশেষে পিএইচডি শিক্ষার্থীর চ্যালেঞ্জসমূহ ও তা মোকাবেলার নানা কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন ড. মোঃ মিলন হোসেন। তিনি বলেন, পিএইচডি সম্পন্ন করা অন্য ডিগ্রী থেকে অনেক কঠিন একটা কাজ। রিসার্স চ্যালেঞ্জের সাথে সাথে পারিপার্শ্বিক আরো অনেক বাধা অতিক্রম করার দরকার পড়ে। নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়া, কোর্সগুলোতে প্রয়োজনীয় গ্রেড রাখা, পিএইচডি কোয়ালিফাইং পরীক্ষায় পাশ করা শুরুর বাধার মাঝে পড়ে। এরপর গবেষণা শুরু হলে সমস্যা চিহ্নিত করা, বিভিন্ন আঙ্গিকে সেটা সমাধান করা, প্রফেসর এর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা, নিয়মের বাইরে অনেক প্রফেসর অনেক কিছু করতে বলে এবং বর্ণবাদী আচরন করতে পারে সেগুলো মোকাবেলা করে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাটা অনেক কঠিন কাজ। আর এই সবধাপ পার হবার প্রধান শর্ত হল, ধৈর্য্য ধারন করা, নিয়মাবর্তিতা এবং লক্ষ্য নির্ধারন করে কাজ করা। কোন সমস্যা নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেলে, নিজের মাঝে না রেখে নির্দিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা বলা।