ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির দাবিতে ভিসির পিএসকে অবরুদ্ধ করেন ও প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটা হতে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তারা এ আন্দোলন করেন। এসময় প্রধান ফটকে তালা দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। প্রায় ৪ ঘন্টা পরে প্রক্টর আসলে এবং আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করে তালা খুলে দেয়।
উল্লেখ্য, সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৪তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনজনকে শিক্ষক ও একজন ড্রাইভার নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন নিয়োগের মধ্যে রয়েছে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক আরিফ হাসান, যিনি বিএনপি দলীয় ও জামায়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ করে সাবেক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার আন্দোলন শুরু করে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা।
তবে এ দাবিতে আন্দোলন করলেও তাদের মূল দাবী ছিল চাকরি স্থায়ীকরনের। দীর্ঘদিন ধরে দিনমজুরী ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করে আসছেন তারা। চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে তারা বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে আন্দোলনও করেন। এই দুই দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে উপাচার্যের দপ্তরে যায় ছাত্রলীগের সাবেক অর্ধশত নেতাকর্মী।
এসময় উপাচার্যের পিএসকে অবরুদ্ধ ও ওই অফিসে কর্মরতদের বের করে দেন তারা। প্রায় ২ ঘন্টা পর সহকারী প্রক্টরদের সহযোগিতায় অফিস থেকে বের হয় উপাচার্যের পিএস। পরে আন্দোলনকারীরা ওই স্থান ত্যাগ করে প্রধান ফটকে তালা দেয়।
এসময় চাকরির দাবিতে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এতে বেলা সাড়ে ৩টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহনকারী নিয়মিত গাড়িগুলো আটকে যায়।
ফলে প্রায় দুই ঘন্টার ভোগান্তিতে পড়ে তারা। এক পর্যায়ে আটকা পড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভোগান্তরি শিকার হন। পরে আন্দোলনকারীদের সাথে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনের দীর্ঘ সময় পর ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রক্টরের আশ্বাসে তারা প্রধান ফটক থেকে সরে যায়।
আন্দোলন শেষে চাকরি পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টিটু মিজান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দিনমজুরী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের বিষয়টি সিন্ডিকেটে আলোচনা হয়না। অথচ নতুনভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আমরা আজ আন্দোলন থেকে সরে এসেছি। সোমবারের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান না হলে ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়া হবে।
ভোগান্তির বিষয়ে একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ২ ঘন্টা যাবৎ আমাদের বাসগুলো আটকে রাখা হয়। প্রায়শই আমরা এরকম ঘটনার সম্মুখীন হই। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে এসব দেখতে হয়। এর স্থায়ী প্রতিকার চাই আমরা।
এ বিষয়ে উপাচার্যের পিএস আইয়ুব আলী বলেন, চাকরির দাবিতে মূলত তারা আমাকে অবরুদ্ধ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পক্ষ তাদের দিয়ে এসব কাজ করাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রাপ্ত কেউ না। এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে তাদের দৈনিক মজুরিতে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো। এখন তার আর দরকার নেই।
এই ক্যাম্পাস/ইবি