জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের রেষারেষি প্রকাশ্যে এসেছে। কথা কাটাকাটির জেরে হামলার শিকার হয়েছেন এক গ্রুপের সদস্য। শিবির কর্মীদের রোভার স্কাউটের সদস্যপদ নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে।জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রোভার ইন কাউন্সিলের নির্বাচন শেষে ডেন থেকে বের হন কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব। ডেন থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে আসলে আহসান হাবিব ও নাজমুল হাসান মুন্নার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রোভার স্কাউট গ্রুপে ৩ জন রোভারের শিবির সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ও তাদের সদস্যপদ এখনও থাকা নিয়ে এবং সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে দুইজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে কথা-কাটাকাটির জেরে মুন্নার সাথে থাকা কয়েকজন আহসান হাবীবের উপর চড়াও হয়।জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
এরআগে দুপুরে রোভারের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা মুন্না, আহসান হাবিবসহ কয়েকজনকে নিয়ে পূর্ববর্তী মনোমালিন্যগুলো মিমাংশার উদ্দেশ্যে বসেন। এসময় মুন্না শিবিরকর্মীদের সদস্যপদ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার একটু আগে আহসান হাবীব ক্যাম্পাসের মূল ফটকে আসলে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশনস বিভাগের মুন্নার মধ্যে শিবির ও নির্বাচন ইস্যুতে কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এবং আহসান হাবীব আহত হোন।জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হাসান মুন্না বলেন, ‘সে সাবেক সভাপতি হওয়া সত্বেও নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করছিল এবং বর্তমান কমিটির সাথে গোপন বৈঠক করেছে। এটা নিয়ে এবং শিবির কর্মীদের সংগঠনের সদস্যপদ থাকার বিষয়ে আমি তার কাছে জানতে চাইলে আমাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।’জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
রোভার ইন কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি আহসান হাবীব বলেন, ‘তার সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। গতকাল এজিএম ছিল সেজন্য সাবেকদের দুপুরের খাবারের জন্য দাওয়াত দিয়েছিল। আমি সহ আরও কয়েকজন সাবেক রোভার সেখানে উপস্থিত হই। আমি সভাপতি থাকাকালীন নির্বাচনে সে হেরে যায়। সেজন্যই ব্যাক্তিগত আক্রোশ থেকে সে আমাকে হুমকি-ধামকি দেয়। সন্ধ্যার একটু আগে ক্যাম্পাস থেকে বের হলে মূল ফটকের এখানে মুন্নাসহ আরও কয়েকজন আমার ওপর হামলা করে মারধর করে।’জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
এবিষয়ে রোভার স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান খন্দকার বলেন, ‘আমি ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছি এবং এরকম ঘটনার জন্য খুবই মর্মাহত হয়েছি। লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা সবাই বসে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবো।’
শিবির কর্মীদের সদস্যপদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রোভার স্কাউট একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এটা একটি সেবামূলক সংগঠন। এখানে কারোর রাজনৈতিক পরিচয় দেখে সদস্যপদ দেয়া হয়না। আমাদের এমন কোনো বিধিবিধানও নেই বহিষ্কার করার। এটা সংগঠনের সম্পূর্ণ বাইরের বিষয়।’জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছি। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। লিখিত অভিযোগ এলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। আর হামলার শিকার শিক্ষার্থী গতকাল থানায় গিয়েছিলো বলে জানিয়েছিলো, আমি অভিযোগ দায়ের করতে বলেছিলাম, এখন সেটা করেছে কিনা তা আমাকে জানানো হয়নি।’জবি রোভার স্কাউটের দুই গ্রুপের প্রকাশ্যে রেষারেষি
জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, শিবিরের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্সে। গতকালকের বিষয়টা আমি শুনেছি। মুন্না আমাদের সাথে ছাত্রলীগ করতো, এখন ও বিয়ে করেছে, বিয়ে করলেতো আর ছাত্রলীগ করা যায় না। আর আহসান ছেলেটা শিবিরের সাথে জড়িত। সংগঠন করবে ভালো কথা, দেশের ক্ষতি করবে, ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করবে এটা হয়না। শিবিরের যে ৩জন সদস্য গ্রেফতার হয়েছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় বহিষ্কার করলেও তারা সংগঠন করছে। এটা প্রশাসনের গাফলতি। ওরা দেশবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় গ্রেফতার হয়েছে, তারা কিভাবে রোভার থাকে।