বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) আবাসিক হলগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু ও শে-রে-বাংলা হলে এ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। গোসলের সময়, অযুর সময় পানি পাওয়া যায় না। বিশেষ করে শুক্রবারে গোসলের সময় লাইন দিতে হয়। হল প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে এমন হচ্ছে বলে অভিযোগ আবাসিক শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা জানান শেরে বাংলা হল সংলগ্ন পুকুরটি সংস্কার হলে এ সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
জানা যায়, এ দুই আবাসিক হলে ৮০০ থেকে এক হাজারের মতো শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। পানির ট্যাংক, মটর নষ্ট হওয়ায় কারণে বিগত কয়েকদিন থেকে পানি সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। গোসল, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সর্বত্র পানির প্রয়োজন সেখানে পানি সংকট সমাধানে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসন। এতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বেলাল বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে প্রায় বারো বছর। ক্লাস সংকটের পাশাপাশি আবাসিক সংকটও এখানে ভয়াবহ। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য চারটা হলের ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। যে চারটা হল আছে সেগুলোতেও নানা সমস্যায় জর্জরিত। সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে সেটা হলো পানি সংকট। হলগুলোতে নিয়মিত পানি থাকে না বললেই চলে। আর কিছুদিন ধরে তা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনকে বললে তারা এর সাময়িক সমাধানটুকু করে। আসলে সাময়িক সমাধান কখনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের একটু সদিচ্ছা থাকলে এর স্থায়ী সমাধান হতে পারে। শেরে বাংলা হলের পাশের পুকুরটা যদি সংস্কার করে দেওয়া হয় তাহলে সমস্যার সমাধান অনেকটাই হয়ে যায়। ছেলেদের দু’টো হলে প্রায় ৮০০ মতো স্টুডেন্ট থাকে। শুধু গোসলের সময় যদি জন প্রতি ৩ বালতি পানি ব্যবহার করে তাহলে বিশাল পরিমাণের পানি শুধু গোসলের জন্য অপচয় হচ্ছে। যা পরিবেশের জন্যও ভয়াবহ।
প্রিতম বিশ্বাস নামের এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, বঙ্গবন্ধু হল এবং শের ই বাংলা হলের জন্য একটা পুকুর অতন্ত্য জরুরি বিষয় এখন। ৫০ একর ক্যাম্পাসে সবার ব্যবহারের মতো কোনো পুকুর নাই। শুক্রবার সিরিয়াল দিয়েও গোসল করা যায় না ঠিক মতো। যারা রেগুলার নামাজ পড়ে ওজু করার জন্যও মাঝে মাঝে পানি পায় না। দিনের মধ্যে ২/৩ বার পানির জন্য চিল্লাচিল্লি করা লাগে তাও পানি পাই না। প্রতিদিন কোনো না কোনো ফ্লোরে বা ফ্লোরের কোনো সাইডে পানির লাইনে সমস্যা থাকে। দুই দিন পর পর ট্যাংক নষ্ট, নাহয় মটর নষ্ট। রেগুলার ইমারজেন্সি যখন পানি দরকার তখন পানি পাওয়া যায় না (প্রায়ই হয় এমন)। মাঠে খেলার পরে গোসলের জন্য যাওয়া লাগে কীর্তিনখোলায় গোসলের জন্য, না হয় গায়ে ঘাম ময়লা নিয়েই রুমে যাওয়া লাগে। কর্তৃপক্ষের এসব বিষয়ে গা ছাড়া ভাব।
বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট আরিফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দেওয়ার পরে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো আমাদের হাতে না।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। শিক্ষার্থীদের সমস্যা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। হলের প্রভোস্টদের সাথে কথা হয়েছে। এবং পানি সংকটের এই সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে। পুকুর সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটাও অতি দ্রুত সংস্কার করা হবে।