উত্তরাঞ্চল দেশের দরিদ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত । এখানকার মানুষ সাধারনত কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। উত্তরের জেলা রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরাঞ্চলের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। দেড় যুগ পার করা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীই থাকেন মেসে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় আমিষ খেতে হিমশিম শিক্ষার্থীদের
বর্তমান বাজারে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে কোন মতে খেয়ে জীবনযাপন করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আমিষ-প্রোটিন জাতীয় খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এতে প্রকট স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় আমিষ খেতে হিমশিম শিক্ষার্থীদের
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা মাছ-মাংস তথা আমিষ-প্রোটিন জাতীয় খাবার খুবই কম কিনছেন। এখন তারা আলু, ডাল, পেঁপে, শাক-সবজি আর ডিমকে বাজার তালিকার শীর্ষে রাখছেন। এছাড়া হলে অবস্থানরত অনেকেই তিনবেলা খাবার খাচ্ছেন না। কেউ কেউ সকালের খাবারই খায় না। বাকি একবেলা ভাত অপর বেলা হালকা নাস্তা দিয়ে দিন পার করছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
আগে মেসে ৪০-৫০ টাকা মিল রেট থাকলেও বর্তমানে সব কিছুর দাম বাড়ার ফলে ৬০-৭০ টাকা মিল রেট করা হয়েছে। এছাড়া বেশিরভাগ বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়িয়েছেন। এদিকে হলের ডাইনিংয়ে প্রতিবেলা ৩০ টাকা দিয়ে খাবার খেতে হয়। তবে সেই খাবারের পুষ্টিগত মান নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় আমিষ খেতে হিমশিম শিক্ষার্থীদের
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাদমান খান সজীব বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা খুবই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছি। কয়েক মাস আগেও আমরা সপ্তাহে ২/৩ দিন ডিম, মাছ-মাংস ও আমিষ সমৃদ্ধ খাবার কিনে খেতে পারতাম। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দরূণ তা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে চলে গেছে। এখন অনেকে আমরা মাছ-মাংস কিংবা ডিমের মত খাবার কিনতে অপরাগ। আমাদের মধ্যে অনেকেই এখন দিনে ৩ বেলা খাবার খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকির চরম পর্যায়ে।
রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-আল-রশীদ বলেন, আমিষ মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। আমাদের দৈনন্দিন সুষম খাবারে অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট, আমিষ, প্রোটিন, ভিটামিন মিনারেল থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের খাবারে প্রোটিনের ঘাটতি থাকলে তাদের শারীরিক ও মানসিক গঠনে প্রভাব পড়বে। এক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল ক্যান্টিন ও ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারেন।