গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস ড্রাইভার এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে দুই দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷ এতে এক শিক্ষার্থী এবং দুই বাস ড্রাইভার আহত হয়েছেন।
আহত শিক্ষার্থী ফয়সাল শেখ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপরদিকে আহত দুই ড্রাইভারের নাম রবিউল ইসলাম এবং বাহারুল শেখ। এদের মধ্যে মধ্যে ড্রাইভার বাহারুল শেখ বর্তমানে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
![বশেমুরবিপ্রবিতে বাস চালক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ,আহত ৩](https://i2.wp.com/eaicampus.com/wp-content/uploads/2022/04/SAVE_20220403_234715-300x169.jpg)
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ১৫ নং বাসের ড্রাইভার বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন এবং তার বাইককে এমনভাবে ধাক্কা দিতে যাচ্ছিলো যে তার মৃত্যু হতে পারতো। এমন পরিস্থিতিতে তিনি বাস থামিয়ে তার সাথে কথা বলতে গেলে তিনি আমার বাবা মাকে উল্লেখ করে অশ্রাব্য ভাষায় কটূক্তি করেন এবং তার কলার ধরেন। পরবর্তীতে তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লে তার হাতে থাকা বাইকের চাবিতে ড্রাইভার কপালে আঘাত লাগে। এরপরেই কয়েকজন ড্রাইভার মিলে তাকে বেধরক মারধর করে।
![বশেমুরবিপ্রবিতে বাস চালক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ,আহত ৩](https://i3.wp.com/eaicampus.com/wp-content/uploads/2022/04/SAVE_20220403_234437-1-290x300.jpg)
এবিষয়ে পরিবহন প্রশাসক তাপস বালা বলেন, “ঘটনাস্থলে পৌঁছেই আমি আহত শিক্ষার্থী ও ড্রাইভারকে প্রক্টর স্যারসহ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।”
পরবর্তীতে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ মোরাদ হোসেন সাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে অভিযুক্ত দুই বাস ড্রাইভারকে বরখাস্ত করা হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ আহসান ফয়সাল এর সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্খিত ঘটনার প্রেক্ষিতে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন ড্রাইভার (১) রবিউল ইসলাম, (২) আতিকুর রহমান (ঝন্টু)-কে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো এবং তদন্ত কমিটির সুপারিশক্রমে বিধি মোতাবেক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, এ ঘটনার কিছু সময় পরেই প্রায় ৭.৪৫ এর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের সাথে এক বাস ড্রাইভারের বাকবিতন্ডা হয় এবং যা হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষের রূপ নেয়। এতে বাস ড্রাইভার বাহারুল শেখ আহত হয়েছে। বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কর্মচারী সমিতির সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘একজন স্টাফ যদি একজন ছাত্রকে মেরে দু’জন স্টাফ বহিষ্কার হয়,তাহলে আমাদের স্টাফকে ৩০-৪০ শিক্ষার্থী মিলে মারছে আমরা অপেক্ষায় আছি তাদের কি বিচার হয়। আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিবো না প্রশাসন আছে। আমরা কাল অবস্থান কর্মসূচী নিবো এবং যে দাবিদাবা আছে এগুলো রেজিষ্ট্রার বরাবর দিবো। প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিবে আমরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিবো।’
প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও দুইজন ড্রাইভারের মধ্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আলোচনার মাধ্যমে দুইজন কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আহত ড্রাইভার বাহারুল শেখ কে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তিনি এখনো পর্যন্ত কাউকে চিনতে পেরেছেন বলে শুনিনি এবং কোন অভিযোগ করেনি’