35 C
Bangladesh
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

বাবা দিবস নিয়ে ববিয়ানদের ভাবনা

বিশেষ দিন ও বাংলাদেশবাবা দিবস নিয়ে ববিয়ানদের ভাবনা
বাবা মানে বটবৃক্ষের ছায়া। বাবা মানে নির্ভরতা। শাস্ত্রে বলা হয়-‘পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম পিতাহী পরমং তপঃ। পিতরী প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতা।’ এর অর্থ-‘পিতাই ধর্ম, পিতাই স্বর্গ, পিতাই পরম তপস্যা। সন্তানের প্রতি পিতা বা বাবার ভালোবাসা চিরকালের।’ বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের একটি অন্যতম দিন বাবা দিবস। আজ সেই দিন। প্রতিবছর জুনের তৃতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী বাবা দিবস উদ্যাপিত হয়। পশ্চিমা বিশ্বে এ ধারণা প্রচলিত হলেও আমাদের দেশেও দিনটি উদ্যাপন করা হয়।
বাবা দিবসে আজ কতটা সুখে আছে এই বিশ্বের সকল বাবা? কতটাই বা সুখে রাখতে পেরেছেন নতুন প্রজন্ম?বাবা দিবস কি শুধুই একদিনের হওয়া উচিত? এসব প্রশ্নের উত্তর জানব বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। জানব বাবা দিবস নিয়ে নতুন প্রজন্মের অনুভুতি। বাবা দিবস নিয়ে ববিয়ানদের ভাবনা।
পরম পূজণীয় বাবা

বাবা..
দুই অক্ষরের এই শব্দটির তাৎপর্য দুই কোটি শব্দ দিয়েও ব্যাখ্যা করা সম্ভব না। বাবা মানে আস্থার সাগর,  ঝড়-ঝঞ্ঝাটে নির্ভরতা, শক্ত খুঁটির ভর। শরীরের রক্ত পানি বানিয়ে,মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, নিজের শারীরিক সুস্থতার তোয়াক্কা না করে সন্তানের মুখে হাসি ফোটানো, সন্তানের সকল চাহিদা পূরণ করার মানুষটি হচ্ছেন “বাবা”। বাবার স্নেহ অবারিত ধারায় শুধুই সন্তানের জন্য।
বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। তারপরও বাবার জন্য বিশেষ দিন হিসেবে প্রতি বছর বাবা দিবস পালন করা হয়। পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছে থেকেই শুরু এই দিবসের।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায়,” বাবা আমার এই জিনিসটা লাগবে”, “বাবা,কালকের মধ্যে টাকা না দিলে জিনিসটা আর পাবোনা”, “বাবা আমার এই জিনিসটা অবশ্যই লাগবে” এরকম হাজারো চাহিদার কথার মাঝে কখনো বলা হয়ে উঠেনি, “বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, তুমি আমার জীবনের হিরো,সেরা আদর্শ “। আজ বাবা দিবসে আমি একটা কথাই বলতে চাই,” বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমাকে উপহার দিবো এমন সাধ্য আমার নেই,কিন্তু অবশ্যই তোমাকে আমি একটা ভালো মানুষ উপহার দিতে পারবো। সেই অবধি তুমি ভালো থেকো বাবা।”
বাবাকে ভালোবাসেনা এমন সন্তান খুজে পাওয়া ভার!  বাবা সব সন্তানের কাছেই পরম পূজণীয়। সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়, বাবা, সবসময় ভালো থাকুক। পৃথিবীর সকল বাবাদের জানাই বাবা দিবসের শুভেচ্ছা।

আরো পড়ুন:  স্বাধীনতার মাসে এক আত্নপ্রকাশিত কবিতাঃ বাংলার অলংকার

শিক্ষার্থী,ফারহানা আফসার মৌরী,ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বাবা দিবস নিয়ে ববিয়ানদের ভাবনা

বাবা ছাড়া জীবন অপূর্ণ
বাবা হলো স্রষ্টার জলজ্যান্ত রূপ। যে আমাদের সকল বাধা-বিঘ্ন থেকে রক্ষা করে। সন্তানের কাছে বাবা হলো তার আদর্শ। বাবা ছাড়া একটি দিনও কল্পনাই করতে পারি না।  আমার জীবনে আমার বাবা সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু,  জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সে আমার পাশে ছিল,আছে ও ভবিষ্যৎতেও থাকবে। সবসময় ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা বাবার থেকেই পাই। সব পরিস্থিতিতে সকল রকম ত্যাগ করা, সততার সাথে জীবন পরিচালনা করা শেখায় বাবা নামক শব্দটি। পড়াশুনার বাইরেও যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারি, অসহায় মানুষের পাশে দারাতে পারি  সেই পরামর্শই পাই বাবার থেকে সবসময়। আমার মনে আছে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার খবরটি  বাবা জানতে পারলো তখন খুশিতে তার চোখ থেকে জল পরে গিয়েছিল, গর্বে তার মুখ ঝলমল করতেছিলো সন্তানের সাফল্যই বাবার অহংকার।  প্রতিটি মূহুর্তের পরিপূর্ণতা খুজে পাই যখন বাবা পাশে থাকে। একজন বাবা তার সবটুকু দিয়ে আগলে রাখে পরিবারকে, নিঃস্বার্থভাবে পরিবারের সকলের চাহিদা পূরণ করে । তার জীবনের সমস্ত সুখ সন্তানের খুশির মধ্যে সমর্পণ করেন । যত কষ্টই হোক না কেন, সে সন্তানের চাহিদা পূরণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান সর্বদা।  এই পৃথিবীর প্রত্যেকটি বাবাই যেন এক একজন সুপারহিরো। আর এই সুপারহিরো দের জন্য শুধুমাত্র একটি দিন নিদিষ্ট ভাবে পালনের মধ্যে আমি কোনো যথাযথ কারন খুজে পাই না। বাবাদের পরিশ্রম ও ত্যাগের মাধ্যমেই পরিবারের সমৃদ্ধি লুকায়িত থাকে, তাই সন্তানদের উচিৎ বাবাদের যথার্থ সম্মানের মাধ্যমে প্রতিটি দিনকে বাবা দিবসের সমতুল্য গণ্য করা। বাবারা ছোট-বড় যে কাজই করুক না কেন তারা তাদের সন্তানের দায়িত্ব ও কতর্ব্য পালনে কখনও  অবহেলা করেন না কিন্তু বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, সন্তানদের তাদের বাবার প্রতি অবহেলা ও অনাদরের ছবি যা কখনই কাম্য নয়। বাবা হলো আদর্শের , শ্রদ্ধার ও সম্মানের প্রতিচ্ছবি।শিক্ষার্থী:সুস্মিতা দত্ত অথৈ,সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বাবা দিবস নিয়ে ববিয়ানদের ভাবনা

আরো পড়ুন:  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন আজ

বাবার জন্য আলাদা কোনো দিবসের প্রয়োজন নেই।
১৯ জুন বিশ্ব বাবা দিবস, বিশ্বের বুকে একটি অন্যতম দিবস হিসেবে পরিচিত হয়ে আছে এই দিনটি।অনেক গুরুত্বপূর্ণ এই দিবসের পরিপ্রেক্ষিতে সম্মান জানানো হয় সব বাবা’দের।

বাবার জন্য আলাদা কোনো দিবসের প্রয়োজন নেই। তবু আনুষ্ঠানিকভাবে যদি কোনো উপায় থাকে, তাহলে মন্দ কী! এ চিন্তা থেকেই বিশ্ব মা দিবসের আদলে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব বাবা দিবস। মায়ের পাশাপাশি বাবাও যে সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটা বোঝানোর জন্যই এ দিবস পালনের শুরু।

বাবার চোখে সব সন্তানই সমান। কিন্তু মেয়ে সন্তানরা বোধহয় একটু বেশিই আদর পেয়ে থাকেন। ফলে মেয়ের বিয়ের সময় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পান বাবাই। হিন্দুরীতির বিয়েতে যখন বাবা ‘কন্যাদান’ করেন, তখন তার কান্নায় আর্দ্র হয়ে ওঠেন উপস্থিত সবাই। বাবার প্রতি মেয়েরও রয়েছে গভীর অনুভূতি। সব মেয়েই প্রথম যে পুরুষের ব্যক্তিত্বে আকৃষ্ট হয়, তিনি হলেন বাবা। আর সে জন্যই বিদায় বেলায় নিঃশব্দ অশ্রু গেয়ে ওঠে।
ছেলেদের কাছেও বাবা অতুলনীয়। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার সঙ্গে ভয়ের এক অম্ল-মধুর সম্পর্ক বাবা আর ছেলের। বাবার ভয়ে মায়ের আঁচলে মুখ লুকানোর পরমুহূর্তে বাবার কাছে গিয়ে আবারও আবদার করা। একটু বড় হয়ে বাবার সঙ্গে সংসারের নানা বিষয়ে আলোচনা করা। আর যুবক বয়সে বাবার দায়িত্ব তুলে নেয় ছেলেই। বাবাকে একটু আনন্দে রাখতে ছেলেরাও বিসর্জন দেয় নিজের সুখ শান্তি। সব মিলিয়ে বিশ্ব বাবা দিবসের জন্য অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সবাইকে।
শিক্ষার্থী: রেদওয়ানুর হক শুভ,ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। বাবা দিবস নিয়ে ববিয়ানদের ভাবনা

আরো পড়ুন:  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ও শিক্ষা জীবন

বাবা দিবসের আবার দরকার কেন?
আমি কখনও বাবাকে নিয়ে লিখিনি। আগে ভাবতাম বাবা দিবসের আবার দরকার কেন? আজ যখন বাবাকে নিয়ে লিখতে বসলাম তখন নিজেকে প্রশ্ন করি যে, আগে কেন তাঁকে নিয়ে লিখিনি!!!  অথচ বাবা তাঁর ভালোবাসা প্রকাশে কখনও কমতি রাখেনি।  যদিও বাবাদের ভালোবাসা প্রকাশের পদ্ধতি আলাদা। তারা মুখে ভালোবাসি না বল্লেও ছেলেমেয়েদের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে ত্যাগ করতে দ্বিধা বোধ করেন না। মুঘল সম্রাট বাবর তার সন্তান হুমায়ুনের জীবনের বিনিময়ে নিজের জীবন ত্যাগ করতে বিন্দু মাত্র দ্বিধা বোধ করেন নি।
বাবারা এমন ই হয়। সন্তানের মুখের হাসির জন্য  নিঃশব্দে কাজ করে যান।

আমার মতে,  বাবা দিবসে সন্তানদের সামনে সুযোগ আসে বাবাকে ধন্যবাদ জানানোর।  এ দিবসে ছেলেমেয়েদের থেকে গিফট পেয়ে বাবারাও বেশ অভিভূত হয়ে যান।অনেক সন্তানই আছে যারা পিতামাতার দেখাশোনার প্রতি খুবএকটা মনোযোগী নয়। যার কারণে  অনেক বাবা বা ময়েরা তাদের বৃদ্ধ বয়সে নিঃসঙ্গ থাকে। দূঃখজনক হলেও সত্যি যে, এই নিঃস্বার্থ বাবা মায়ের অনেক সময়ে শেষ ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রম।মা দিবস বা বাবা দিবস এমন সন্তানদের চোখের সামনের পর্দাটি খুলে ফেলে তাদের প্রতি দ্বায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

শিক্ষার্থী:লামিয়া আক্তার পলি,ইংরেজি বিভাগ,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles