নামাজে ডাকাডাকির জের ধরে সংঘর্ষে আহত রাবি শিক্ষার্থী

নামাজ পড়তে ডাকা ও রুমের সামনে উচ্চস্বরে কথা বলার জের ধরে সংঘর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে। বুধবার (৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নগরীর ধরমপুর এলাকায় এন আর ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী সাফায়ার নাইম নাফি। তিনি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনে অধ্যয়নরত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ছাত্রাবাস সূত্রে জানা গেছে, এন আর ছাত্রাবাসে থাকতেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিপরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে রুমের সামনে উচ্চস্বরে কথা বলা, নামাজে ডাকা নিয়ে আগে থেকে তর্কবিতর্ক হয়েছিল শরিফের। পরে বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পদার্থ বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিভাগের ১৩-১৪ জন শিক্ষার্থী মীমাংসা করতে এন আর ছাত্রাবাসে যান। আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রাবাসটির অন্যন্য বর্ডার ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা মোটামুটি সমাধানের পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন।
কিন্তু রুমের মধ্যে স্থান সংকুলান না হওয়াতে ভুক্তভোগী নাফিসহ কয়েকজন ছাত্রাবাসের ফটকে দাঁড়ান। এরমধ্যে কিছু বুঝে উঠার আগেই বহিরাগত ৫-৭ জন এসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। এসময় বহিরাগতরা ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে ছাত্রাবাসের ফটকে দাঁড়ানো নাফিসহ শিক্ষার্থীদের উপর। এসময় তাদের সাথে সংঘর্ষ বেঁধে যায় শিক্ষার্থীদের। পরবর্তীতে আহত নাফিকে রাবি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। ঢাকায় নেয়ার আগে তিনি রামেকের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এন আর ছাত্রাবাসে মিমাংসা করতে যাওয়া রাবি’র পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের মারামারি করার কোনো ইচ্ছেই ছিল না। শরীফের পরীক্ষা কিন্তু জুনিয়র ছেলেটা রুমের সামনে এসে উচ্চস্বরে কথা বলতো। এটা নিয়ে আগে মেসের বড় ভাইদের বলে কোনো সমাধান না হওয়াতে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। ওই ছেলেকে দিয়ে স্যরি-টরি বলাই। পরপরই হঠাৎ করে কয়েকজন এসে উপস্থিত হয়। একজন বলে ওঠে এদেরকে (রাবি শিক্ষার্থীদের) আটকা, বাইর হইতে দিস না বলেই আমাদের উপর হামলা করে। এসময় নাফিসহ কয়েকজন রুমের বাইরে ছিল। তবে হামলাকারীদের শিক্ষার্থী মনে হয়নি তার।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, ‘আমরা আপাতত আহত শিক্ষার্থীকে (নাফিকে) উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। চলাফেরা নিয়ে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে কথাকাটি থেকে ঘটনার সূত্রপাত। বিষয়টি জানামাত্রই আমি আর ছাত্র উপদেষ্টা ঘটনা স্থলে গিয়েছিলাম। ওই শিক্ষার্থীকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। এখন আহত শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছি।’
এবিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, “আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারবো না।”

Warning: Attempt to read property "term_id" on bool in /home/u869490283/domains/eaicampus.com/public_html/wp-content/themes/flex-mag/functions.php on line 982